ব্রাক শিক্ষক মাহতাবের ইস্যুতে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে বিকাশসহ ব্রাক সংশ্লিষ্ট সেবা বয়কটের হিড়িক পড়েছে। ফেইসবুকে বয়কট আহ্বান ছড়িয়ে পড়ার পড় থেকে বিকাশ ব্যবসায় ভাটা পড়েছে। অনেকেই বিকাশ এ্যাপস বন্ধ করে দিয়েছেন৷ কটিয়াদী উপজেলার বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী ও বিকাশ গ্রাহকদের সাথে কথা বলে এই তথ্য জানা যায়। অধিকাংশ দোকানে বড় কোন লেনদেন হয়নি৷ যাদের একাউন্টে টাকা ছিল অনেকেই বের করে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিকাশ এজেন্ট বলেন, গতকালের ঘটনার পর থেকে লেনদেনে প্রভাব পড়েছে। প্রতিবাদ হিসেবে গ্রাহকেরা বয়কট করছেন বলে তাদেরকে বলেছেন।
বিকাশ গ্রাহক আলামিন বলেন, ব্রাক শিক্ষক মাহতাব ইস্যুতে যতক্ষণ না দুঃখ প্রকাশ করে তার চাকরি ফিরিয়ে দিবে ততক্ষণ পর্যন্ত ব্র্যাকের সংশ্লিষ্ট সকল কিছু বয়কট করবো৷
গত শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম আয়োজিত ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের দুটি পাতা ছেঁড়েন আসিফ মাহতাব।
মাহতাব অভিযোগ তোলেন বইয়ে ট্রান্সজেন্ডারের গল্প ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করা হচ্ছে। এ সময় তিনি সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের ৮০ টাকা দিয়ে বইটি বাজার থেকে কিনতে বলেন। পরে বইয়ের ট্রান্সজেন্ডারের গল্প থাকা দুটি পাতা ছিঁড়ে আবার দোকানে ফেরত দিতে বলেন এই শিক্ষক।
এই ঘটনার পর রোববার (২১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মাহতাব লেখেন, ‘আজকে আমি ব্র্যাকে রেগুলার ক্লাস নিয়েছি। আমাকে এইমাত্র ফোন করে জানানো হয়েছে যে, আমি যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আর ক্লাস নিতে না যাই। আমি জানি না হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত তারা কেন নিল। আমাকে কোনো কারণ তারা দেয়নি।’
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের দুটি পাতা ছিঁড়েন তিনি।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আসিফ মাহতাব উৎস ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তার সাথে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কোনো চুক্তি নেই। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তার কর্মী এবং তাদের চুক্তির গোপনীয়তা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ক্যাম্পাসে সবার মাঝে সহযোগিতামূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে শ্রদ্ধা করে।
জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাছির উদ্দীন খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চরমোনাই আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ।